- - ইস্তেগফারের গুরত্ব, ফজীলত সময় ও উপকার - -

- -  ইস্তেগফারের গুরত্ব, ফজীলত  সময় ও উপকার - - 
ইস্তেগফার অর্থ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা
তুমি ক্ষমা চাও তোমার ও মুমিন নারী-পুরুষদের ক্রটি-বিচ্যূতির জন্য (সুরা মুহাম্মদ, ১৯) 
আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ মাশীল, পরম দয়ালূ (সুরা নিসা, ১০৬) 
নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে বন্যা থেকে নিজ ছেলেকে পরিত্রাণ দেয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এটিকে আল্লাহ তায়ালা অন্যায় বলে গণ্য করলে নুহ (আ.) এ বলে ইস্তেগফার করেন, ‘হে প্রভু, আমি আপনার কাছে এমন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা থেকে পানাহ চাই যার ব্যাপারে আমার কোনো জ্ঞান নেই। আপনি আমাকে ক্ষমা ও দয়া না করলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।’ (সূরা হুদ : ৪৭)।
মুসা (আ.) এক মিসরিকে হত্যা করে ফেললে তৎক্ষণাৎ অনুতপ্ত হয়ে এ বলে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, ‘হে রব, আমি নিজের ওপর জুলুম করেছি। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (সূরা কাসাস : ১৬)।
ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে বলেন, ‘আল্লাহ তো তিনি যার ব্যাপারে আমি আশা রাখি যে, তিনি আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সূরা শুআরা : ৮২)।
ইউনুস (আ.) মাছের পেটে গিয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন, ‘আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি মহান। নিশ্চয় আমি জুলুমকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭)।
দাউদ (আ.) এর ব্যাপারে এসেছে, ‘আর দাউদ মনে করল আমি তাকে পরীক্ষায় নিপতিত করেছি। তখন সে তার রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল।’ (সূরা সোয়াদ : ২৪)।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি “আল্লাহর শপথ, আমি প্রতিদিন সত্তরবারের চেয়েও অধিক আল্লাহর ইস্তেগফার করি ও তওবা করি”। (বুখারী) 
ইস্তেগফারের ফজীলতঃ 
ইস্তেগফার আল্লাহর ইবাদত। ইস্তেগফারের কারনে গুনাহ মাফ হয়, বৃষ্টি বর্ষণ হয়, সন্তান ও সম্পদ দ্বারা সাহায্য করা হয় এবং জান্নাতের অধিকারী করা হয়। ইস্তেগফারের ফলে সর্বধিক থেকে শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তিনি তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন” (সুরা হুদ ৫২) ইস্তেগফারের ফলে সুখ-সমৃদ্ধি ও প্রাপ্য হক অর্জিত হয়। ইস্তেগফারের ফলে বালা-মুসিবত দুরীভূত হয়। 
ইস্তেগফারের সময়ঃ 
ইস্তেগফার সব সময় করা যায়, কিন্ত গুনার পর ইস্তেগফার করা ওয়াজিব এবং নেক আমল করার পর মুস্তাহাব। যেমন সালাত শেষে তিনবার ইস্তেগফার করা, হজ্ব শেষে ইস্তেগফার করা ইত্যাদি। তবে সেহরীর সময় ইস্তেগফার করা বেশী ফজীলত, বরং মুস্তাহাব। কারণ এ সময় ইস্তেগফারকারীদের আল্লাহ তায়ালা বেশী প্রশংসা করেছেন। 
নারীদের জন্য ইস্তেগফার করার গুরত্বঃ 
নারীদের জন্য ইস্তেগফার করা খুব জরুরী। নবী করিম (সাঃ) নারীদের কাছে এসে বলেনঃ “হে নারীগন, তোমরা সদকা কর, বেশী বেশী ইস্তেগফার কর। কারন তোমাদের অধিকাংশকেই আমি জাহান্নামের অধিবাসী দেখেছি। তাদের মধ্যে বাকপটু এক নারী বলে উঠলঃ আমাদের অধিকাংশ জাহান্নামী হওয়ার কারন কি? তিনি বললেনঃ তোমরা বেশী লানত কর এবং স্বামীদের নাশুকরি কর। (মুসলিম)

ইস্তেগফার সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত সমুহঃ 
নবীদের ইস্তেগফার
ইস্তেগফার সম্পর্কিত রাসুল (সাঃ) এর বানী সমুহঃ 
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যক্তি ইস্তেগফারকে অবশ্যম্ভাবী করবে, আল্লাহ তাকে সকল সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করবেন এবং সকল পেরেশানী থেকে তাকে নাজাত দেবেন আর এমন জায়গা থেকে রিযিক দেবেন, যার কল্পনা পর্যন্ত সে করেনি ।” 

 ইস্তেগফারের বিশেষ কিছু উপকার হচ্ছে:
 ১. এটি গোনাহকে মুছে ফেলে ও বান্দার মর্যাদা উন্নীত করে। 
২. এর মাধ্যমে বালামুসিবত দূর হয়। 
৩. রিজিক প্রশস্ত হয়। 
৪. পরিবারে শান্তি আসে। 
৫. শরীরে ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়। 
৬. হৃদয় স্বচ্ছ ও নির্মল হয়। 
৭. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়। 
৮. চিন্তা-পেরেশানি দূর হয়।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

ক্ষমা